আয়কর দফতরের চিঠি নিয়ে ফের রাজনীতির ময়দানে নেমেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জনসভা থেকে তিনি ঘোষণা করেছেন এই চিঠিগুলির ফটোকপিই পৌঁছে যাবে তাঁর সংসদীয় এলাকা ডায়মন্ড হারবারের ৭৬ হাজার প্রবীণ নাগরিকের বাড়িতে। যাঁদের তিনি নিজে ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ হিসেবে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। আসলে আয়কর দফতরের চিঠিগুলিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে চাইছেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
জনসভায় অভিষেক বলেন, “আমি ৭৬ হাজার প্রবীণ মানুষকে মাসে এক হাজার টাকা করে ভাতা দিয়েছি। শুধু যাতে তাঁরা স্বছন্দ জীবনযাপন করতে পারেন। বিজেপি ও তাদের আয়কর দফতর জানতে চাইছে কেন আমি টাকা দিলাম। তাই আমাকে দু’বার চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এটাই বিজেপির আসল রূপ। মানুষের পাশে দাঁড়ানোই যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে! তাই সবাইকে জানাতে চাই, বিজেপি কীভাবে বাধা সৃষ্টি করছে। পুজোর আগেই দলের কর্মীদের দায়িত্ব দেব—এই চিঠিগুলি যেন ওই ৭৬ হাজার মানুষের হাতে পৌঁছে দেয়।’’
গত ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে থেকে জানুয়ারি থেকে ডায়মন্ড হারবারে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ‘বার্ধক্য ভাতা’ প্রকল্প চালু করেন অভিষেক। সেই উদ্যোগ ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ওই ভাতার উৎস নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি পাঠান আয়কর দফতরের গোয়েন্দা ও তদন্ত শাখার প্রধানের কাছে। এর কিছুদিন পরেই অভিষেকের কাছে একের পর এক চিঠি আসে—প্রথমটি ৭ জানুয়ারি, দ্বিতীয়টি ২৪ ফেব্রুয়ারি।
অভিষেক বলেন, ‘‘গরিব মানুষের হাতে টাকা পৌঁছেছে বলেই আমার বিরুদ্ধে কেন্দ্রের সংস্থাগুলি সক্রিয় হয়েছে। গরিবের মুখে হাসি ফোটানোই যদি অপরাধ হয়, তবে সেই অপরাধ আমি করে যাব।’’
দলের কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে এই চিঠিগুলি প্রবীণদের হাতে তুলে দিন। যাঁদের জন্য এই টাকা পাঠানো হয়েছিল, তাঁরাই জানবেন—কারা তা বন্ধ করতে চাইছে।” ইতিমধ্যেই বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, এই ‘শ্রদ্ধার্ঘ্য’ প্রকল্পে ‘অবৈধ অর্থের’ ব্যবহার হয়েছে। অভিষেক নিজেও এর আগেই আশঙ্কা করেছিলেন, এ নিয়ে ইডি বা সিবিআই তদন্ত হতে পারে।
অভিষেক সভায় বলেন “আপনাদের রাজ্যের উন্নয়ন আটকে রেখে, সেই অর্থ গুজরাত, উত্তরপ্রদেশে পাঠানো হচ্ছে। আর যাঁরা আপনাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে তদন্তকারী সংস্থার চিঠি।”
Share