BJP MP and MLA Injured During Relief Work

রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ! দুর্যোগকবলিত এলাকা পরিদর্শনের গিয়ে ফাটল মাথা, হেনস্থার শিকার হলেন আরেক বিজেপি বিধায়ক

সোমবার সকালে নাগরাকাটায় দুর্যোগকবলিত এলাকায় গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানে দু’জন বিক্ষোভের মুখে পড়েন। লাঠি, বাঁশ ও জুতো নিয়ে চড়াও হয়।

রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু।
নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি
  • শেষ আপডেট:০৬ অক্টোবর ২০২৫ ০২:৩৩

বিজেপি সাংসদের মুখ থেকে অঝোরে বেরিয়ে যাচ্ছে রক্ত। ঠিক করে গাড়ির সিটে বসতে পারছেন না। মাঝে মধ্যে কাপড় দিয়ে মুখের রক্ত মুছছেন। সোমবার এমন নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায়। সেখানে দুর্যোগকবলিত এলাকা  পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। তাদের দেখে কয়েকশো মানুষ ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। হেনস্থার শিকার হয়েছেন শঙ্কর ঘোষ। পরিকল্পনা করে বিজেপি সাংসদ এবং বিধায়কের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।

সোমবার সকালে নাগরাকাটায় দুর্যোগকবলিত এলাকায় পৌঁছোন মালদহ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বামনগোলা ঢোকার আগেই তাদের দু’জন বিক্ষোভের মুখে পড়েন। লাঠি, জুতো, বাঁশ নিয়ে তাঁদের ওপর চড়াও হয় কয়েকশো মানুষ। ‘বিজেপি দূর হাটো’ বলে স্লোগান ওঠে। বিজেপি বিধায়ক শঙ্করকে ধাক্কা দেওয়া হয়। এর পরেই পিছন থেকে উড়ে আসে জুতো। 

কোনও মতে সেখান থেকে বেরিয়ে গাড়ির দিকে আসেন খগেন মুর্মু এবং শঙ্কর ঘোষ। গাড়িতে ওঠার সময় কয়েক জন গাড়ি ঘিরে নেয়। জুতো, লাঠি, বাঁশ ব‍্যবহার করে পরপর গাড়ির ওপর চলে হামলা। গাড়ি চলা শুরু করলে নদী থেকে বড়বড় পাথর তুলে গাড়ি লক্ষ‍্য করে ছোড়া হয়। এতেই বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু জখম হন। তাঁর নাক মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে থাকে। পাঞ্জাবি রক্তে ভিজে গিয়েছে। এমনকি কাপড় দিয়ে মুখের রক্ত মোছার চেষ্টা করলেও তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় চালসা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার পরে শিলিগুড়ির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে কয়েক সাংবাদিকও।

ঘটনার পরেই একটি ভিডিয়োবার্তায় শঙ্কর বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির সমস্ত কাচ ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়েছে। খগেনদা রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছেন। গাড়ির কোনও কাচ বাকি নেই। আপাতত খগেনদাকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাচ্ছি।’’ শঙ্কর আরও বলেন, ‘‘আমরা ত্রাণ দেওয়ার কাজে সাহায্য করতে গিয়েছিলাম। শমীকদারা বোটে করে নদীর ওপারের মানুষের সঙ্গে দেখা করতে যান। আমরা এ পারেই ছিলাম। তখন কিছু লোক ‘দিদি’র কথা বলে আমাদের ঘিরে ধরে। প্রথমে গালিগালাজ, পরে পিছন থেকে মারধর শুরু করে। মাথা সিটের নীচে ঢুকিয়ে দিয়ে কোনওমতে বেঁচেছি।’’ 

অন্য দিকে, গোটা ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছে বিজেপি। ঘটনার পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দাবি করেছেন, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুণ্ডারা’। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন যে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। তাই উদ্দিঘ্ন হয়ে পরিকল্পিত ভাবে ‘বিশেষ সম্প্রদায়’-এর লোকদের দিয়ে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়ককে লক্ষ করে হামলা চালানো হয়েছে”। এই বিষয়ে নাগরাকাটা থানার অভিযোগ জানানো হবে বলে জানা গিয়েছে। 


Share