Bihar Assembly Election

লালুর বাছাই করা প্রার্থী পছন্দ নয় পুত্র তেজস্বীর! দলীয় প্রতীক পাওয়ার পরেও ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ, ভোটের আগে সরগরম বিহারের রাজনীতি

আইআরসিটিসি হোটেল দুর্নীতি মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকতে সোমবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ী দেবী এবং পুত্র তেজস্বী যাদব। সেখান থেকে গতকাল সন্ধ্যায় পটনায় ফেরেন তাঁরা।

লালুরপ্রসাদেপ বাছাই করা প্রার্থী পছন্দ নয় পুত্র তেজস্বী যাদবের।
নিজস্ব সংবাদদাতা, পটনা
  • শেষ আপডেট:১৪ অক্টোবর ২০২৫ ০২:২৯

লালুপ্রসাদ যাদব দলের বেশ কয়েক জন প্রার্থীর হাতে আরজেডি-র ‘হ্যারিকেন’ প্রতীক তুলে দিয়েছিলেন। প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতেই হাসিমুখে আরজেডি নেতারা লালুপ্রসাদের পটনার বাসভবন থেকে বেরিয়ে ছিলেন। কিন্তু বাবার পছন্দের প্রার্থী ছেলের পছন্দ হয়নি। লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব পটনা ফিরতেই তাদের প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের সরগরম বিহারের রাজ‍্য রাজনীতি।

সোমবার সন্ধ্যায় লালুপ্রসাদ পটনার ১০ নম্বর সার্কুলার রোডের বাসভবনে ফেরেন। লালু বসভবনে ফিরতেই শুরু হয় আরজেডি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঠেলাঠেলি। জানা গিয়েছে, যে নেতাদের আগেই ফোন করে সেখানে যেতে বলা হয়েছিল, তাঁদের কয়েক জনকে ডেকে দলের প্রতীক সম্বলিত হলুদ খাম তুলে দেন লালু। হাতে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ার অর্থ, সংশ্লিষ্ট নেতা প্রার্থী আসন্ন নির্বাচনে হচ্ছেন। লালু ঠিক কত জনের হাতে প্রতীক চিহ্ন তুলে দিয়েছেন, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। তবে হলুদ খাম নিয়ে লালুপ্রসাদের বাসভবন থেকে বেরোতে দেখা হয়েছে জেডিইউ ত্যাগ করে সম্প্রতি আরজেডি-তে যোগ দেওয়া সুনীল সিংহ এবং নরেন্দ্রকুমার সিংহ ওরফে বোগো-কে। মাধেপুরার আরজেডি বিধায়ক চন্দ্রশেখর যাদব, কান্তি কেন্দ্রের বিধায়ক ইসরাইল মনসুরিকে হলুদ খাম হাতে দেখা গিয়েছে।

লালুপ্রসাদ ফেরার কিছু ক্ষণ পরে পটনায় ফেরেন বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা পুত্র তেজস্বী যাদব। বাবা যাদেরকে প্রার্থী হিসেবে পছন্দ করেছে, তাদের কাউকেই লালু-পুত্র তেজস্বীর পছন্দ হয়নি। এর পরেই বিহারের রাজনীতি নাটকীয় মোড় নেয়। তেজস্বীর কার্যালয় থেকে হলুদ খাম পাওয়া নেতাদের কাছে ফোন যেতে শুরু করে। বলা হয়, তেজস্বীর বাসভবনে গিয়ে তাঁদের প্রতীক চিহ্ন ফিরিয়ে দিতে। ফলে প্রতীক পাওয়া আরজেডি নেতারা প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ফের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। কেন ওই নেতাদের জরুরি ভিত্তিতে তলব করে প্রতীক ফিরিয়ে দিত বলা হল, তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। 

আরজেডি নেতা আশরফ ফতামির দাবি, “কাউকেই এখনও দলীয় প্রতীক দেওয়া হয়নি। সমাজমাধ্যমে যে ছবি এবং ভিডিয়ো দেখা গিয়েছে, সেগুলি এআই-য়ের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে”। প্রার্থী বাছাই নিয়ে আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে মতান্তর দেখা দিয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর দু’দফায় বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হবে। ১৪ নভেম্বর ভোটগণনার মাধ্যমে ভাগ্য নির্ধারণ হবে। এ বারের ভোটেও মূল লড়াই এনডিএ বনাম আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’-এর মধ্যে। ইতিমধ্যেই আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করে ফেলেছে এনডিএ। কিন্তু এখনও বেশ কয়েকটি আসন নিয়ে বিরোধী জোটের শরিকদলগুলির মধ্যে টানাপড়েন অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথম দফার ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য আর চার দিন বাকি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্বের আচরণ চিন্তায় রাখছে দলের নেতা-কর্মীদেরও।

প্রসঙ্গত, আইআরসিটিসি হোটেল দুর্নীতি মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকতে সোমবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব, তাঁর স্ত্রী রাবড়ী দেবী এবং পুত্র তেজস্বী যাদব। সেখান থেকে গতকাল সন্ধ্যায় পটনায় ফেরেন তাঁরা।


Share